Monkeypox Outbreak: What You Need to Know

•• স্বপ্ন পূরণ ••

 •• স্বপ্ন পূরণ ••

" তোর মতো ছেলে আমি সত্যিই দেখিনি, নিজের কিছু করার মুরোদ আছে তোর? বাবার পয়সায় কতদিন চলবে আর?" 

" কি বলছো তুমি বাবুকে?" 

"  তুমি চুপ করো! সারাদিন টো টো কোম্পানির মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে, বলি ক্লাস টুয়েলভ যে হতে যায় সেই খেয়াল আছে তোমার? মাধ্যমিকের মতো নাম্বার যদি পাও তো এই বাবার দোকানেই বসতে হবে তোমায়। তার থেকে এখন থেকেই বলে দাও, বেকার পয়সাটা নষ্ট আমার!" 

সায়ন চুপ করে তাকিয়ে থাকে। ইনি ওর বাবা? কেমন যেন ধোঁয়াটে লাগছে! আসলে বয়েসর সাথে সাথে কিছুটা বখে গেছে ও সেটা নিজেই বোঝে। কিন্ত তা বলে... 

" বাবু খাবি আয়।" মা খেতে ডাকছে। 

" খাবো না আমি।" খাবারের থালাটা ঠেলে দিয়ে উঠে গেল সায়ন নিজের ঘরে। 

" ছেলের সাহসটা দেখো শুধু শ্রীমতী। ওকে আমার কাপড় দোকানেই বসতে হবে দেখে নিও।"

ঠিক আট বছর পর। মুম্বাইয়ের এক নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাঘর। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মেধাবী ছাত্র পোস্ট ডক করতে যাচ্ছে বিদেশের এক বড় প্রতিষ্ঠানে, তারই সংবর্ধনাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান। মঞ্চে এলেন ডঃ সায়ন বসুরায়। মাইকটা নিলেন হাতে। 



" সব্বাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আজ আমি যতটুকু এখানে আসতে পেরেছি তার জন্য আমি আমার মা আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তবে হ্যাঁ, আর একজন আছেন। আমার বাবা। অবশ্য তাঁর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা অন্য রকম। আমরা কি জানি, বাবারা ছেলেদের খারাপ সময়ে ছেলেদের পিঠে হাত রেখে ভরসা জোগায়, বুকে সাহস দিয়ে বলে এগিয়ে যেতে। কিন্ত, আমার বাবা ব্যতিক্রম। আমায় ওনার কাপড় দোকানেই বসাতে চেয়েছিলেন। হ্যাঁ, আজ আমি সায়েন্টিস্ট হতে পারতাম না যদি না আমার মা, আর আমার জেদ না থাকতো। বাবার ওই কথাটা আমার রক্ত গরম করে দিয়েছিল সেইদিন। হ্যাঁ, উচ্চমাধ্যমিকে তেমন ফল হয়তো করিনি, কিন্তু আমার রোখ চেপে গিয়েছিল এই মানুষটাকে আমি জবাব দেবোই। আর আজ জবাব আমি দিয়েছি। ইয়েস! আই অ্যাম ডঃ সায়ন বসুরায়। সায়েন্টিস্ট, কোনও কাপড় দোকানের মালিক নয়। হেরে আমি যাইনি মিস্টার অধীর বসুরায় আর সেটা তুমি এই দর্শকাশনে বসে দেখছো। আজ আমি হেরেও জিতেছি।" 

হাততালিতে ভরে গেছে সভাঘর। সেই সময় নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে গেলেন অধীর বাবু, গিয়ে দাঁড়ালেন এক কোণে। হঠাৎই ওনার পিঠে একটা হাত। ঘুরে দেখলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডঃ নাগ। 

" ছেলেকে আজও বলেননি সবটা?" 

" নাহ্, আর কোনওদিন বলতেও চাই না।" 

" কিন্ত কেন? সেইদিন নিজের একটা দোকান বিক্রি করে টাকাটা জমা না করলে সায়নের অ্যাডমিশন হতো? আর তা না হলে আজ...ও তো আপনাকে এখনও ভুল বোঝে।" 

" সায়ন নিজের যোগ্যতায় পেয়েছে স্যার। ওই টাকাটা দেওয়া বাবা হিসেবে আমার কর্তব্য। উচ্চ মাধ্যমিকের পর ছেলেটার পরিবর্তন আমি দেখেছি, সেটা আমার ব্যবহারের জন্য। জানি আজ ও অনেক দূরে চলে গেছে আমার থেকে, কিন্ত ও স্বপ্ন ছুঁতে পেরেছে। বাবা হিসেবে আর কি চাইতে পারি বলুন?" 

" আপনি কাঁদছেন অধীরবাবু?" 

' খুশিতে স্যার, খুশিতে।"

কলমে— #দধীচি 

ছবি— সংগৃহীত

Comments

Contact Form

Name

Email *

Message *