- Get link
- X
- Other Apps
ফ্যাশনে ডেনিমের আবির্ভাব গত শতকের পঞ্চাশের দশকে, ঠিক যখন লেদার জ্যাকেটের আবির্ভাব হয়। সেই তখন থেকে ডেনিম হয়ে আছে ‘টেনিউরড ট্রেন্ড’। একটা সময় ছিল যখন ডেনিম বলতেই সবাই বুঝতেন জিনস। এখনো সবাই এই একটা জায়গায় এসে গোলমাল পাকিয়ে ফেলেন। জিনস হচ্ছে ডেনিম ফেব্রিক থেকে বানানো প্যান্ট। ব্যাপারটা অনেকটা ‘সব জিনসই ডেনিম, কিন্তু সব ডেনিম জিনস নয়’-এর মতো। তাই কখনো জিনসের শার্ট, জ্যাকেট হয় না। সব ডেনিমের শার্ট, জ্যাকেট।
ডেনিম সেই জিনসের গণ্ডি থেকে বেরিয়েছে অনেক আগে। জ্যাকেট, শার্টের পর এখন ডেনিম দিয়ে বানানো হয় নানা ডিজাইনের স্কার্ট ড্রেস, জাম্পস্যুট, টপস, এমনকি কুর্তাও। আমাদের দেশে কেবল শীতের সময় ডেনিমের পোশাক পরতে দেখা যায়। কিন্তু এমন কিছু ডেনিম ফেব্রিক আছে, যা খুব হালকা এবং সাধারণ ডেনিমের চেয়ে পাতলা হয়ে থাকে। তাই এই ফেব্রিকের পোশাক দিয়ে চাইলেই সারা বছর স্টাইলিং করতে পারেন। তাই জেনে নেওয়া যেতে পারে এ বছরের ডেনিম ট্রেন্ড ও এর কিছু স্টাইলিং আইডিয়া সম্পর্কে।
জিনস
জিনসকে একসময় বলা হতো তারুণ্যের প্রতীক। ফ্যাশনবোদ্ধাদের মুখে প্রায়ই শোনা যেত এমন কথা, ‘এখন জিনস যাঁর, যৌবন তাঁর।’ তবে এখন এটি শুধু তরুণদের নয়, মধ্যবয়স্ক, বৃদ্ধ—সবার প্রিয় ফ্যাশন আইটেম। ২০০ বছরে জিনসের অনেক বিবর্তন হয়েছে। পঞ্চাশের দশকের পর থেকে নানা ধরনের জিনস দেখেছে বিশ্ববাসী। কয়েক বছর পরপর এর ট্রেন্ডের পরিবর্তন হয়। নব্বইয়ের দশকে ছেলেদের জন্য এসেছিল ঢিলেঢালা ব্যাগি জিনস। ছিল অনেক দিন। তারপর আবার আসে স্ট্রেট কাট ডেনিম প্যান্ট। আর ওয়াইটুকেতে (ইয়ার অব টু থাউজেন্ড) আবির্ভাব হয় স্কিনি জিনসের। ধীরে ধীরে সেটিও চলে গেছে।
গত তিন–চার বছর মেয়েদের জিনসের ফ্যাশনে বেশ পরিবর্তন এসেছে। মেয়েদের আঁটসাঁট জিনস আর দেখা যাচ্ছে না। সময় এখন ঢোলা জিনসের। ব্যাগি, স্ট্রেট কাট, বুটকাট লেগ, ফ্লেয়ার জিনস খুব চলছে। সেই সঙ্গে নতুন করে আবার এসেছে হাই ওয়েস্ট, ডিস্ট্রেস (ছেঁড়া-ফাটা) ও ফেডেড (রং ঝলসানো) স্টাইল।
ধারণা করা হচ্ছে, এই স্টাইলের ডেনিম প্যান্ট থাকবে অনেক বছর। কারণ, এগুলো পরতে বেশি আরাম আর সব ধরনের বডি শেপের জন্য উপযুক্ত। রঙের ক্ষেত্রে ইন্ডিগো ব্লু, লাইট ব্লুর পাশাপাশি গ্রে আর ফেডেড ব্ল্যাক বেশি দেখা যাচ্ছে। এ ধরনের স্ট্রেট কাট, বুটকাট লেগ, লাইট ফ্লেয়ার প্যান্ট পরা যাবে টি–শার্ট, শার্ট, মিডিয়াম বা লং টপসের সঙ্গে। হাই ওয়েস্ট বা ব্যাগি জিনসের সঙ্গে এই গরমে সবচেয়ে ভালো মানাবে ক্রপ টপ।
শার্ট
ছেলেমেয়ে উভয়ের পছন্দ ডেনিম শার্ট। হাফ বা লং স্লিভের এই শার্ট গরমেও পরা যায়, যদি না ফেব্রিকটা লাইট হয়। ডেনিম শার্টের রং সাধারণত নীল শেডেরই হয়ে থাকে। পরতে পারেন একই শেড বা এক–দুই ধাপ গাঢ় বা হালকা শেডের জিনসের সঙ্গে। ডেনিম অন ডেনিম সব সময় দারুণ মানায়। এ ছাড়া অন্য রঙের অন্য ফেব্রিকের প্যান্ট বা স্কার্ট বা লেগিংসের সঙ্গেও এই শার্ট ভালো মানাবে।
টপস
হাল ফ্যাশনে ডেনিম টপসেরও রয়েছে বেশ কদর। কারণ, এটি বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। এই ফেব্রিকের টপস দিয়ে স্টাইলিংয়ের সুযোগ অনেক। এখন স্লিভলেস, লং স্লিভ, পাফি স্লিভ, কোল্ড শোল্ডার ইত্যাদি ডিজাইনের টপস পরা যায় বিভিন্ন রঙের জিনস, স্কার্ট, নরমাল প্যান্টের সঙ্গে। সাজে বোল্ড স্টেটমেন্ট আনতে চাইলে ডেনিম টপস পরতে পারেন প্রিন্টের পালাজ্জো, হারেম বা ধুতি প্যান্টের সঙ্গে। ডেনিমের ক্রপ টপকে চাইলেই শাড়ির ব্লাউজ হিসেবেও পরতে পারেন।
স্কার্ট
লং, মিডি, মিনি, পেনসিল, ঢোলা—সব সাইজের ডেনিম স্কার্ট পাওয়া যায়। এসব স্কার্ট আবার পুরোপুরি প্লেন নয়। কিছু স্কার্টে নানা ডিজাইনের প্রিন্ট, সুতা বা পুঁতি চুমকির এমব্রয়ডারি আর প্যাচওয়ার্ক দেখতে পাওয়া যায়। জিনসের মতোই এই স্কার্টের সঙ্গে পরতে পারেন নানা ডিজাইনের টপস, শার্ট, টি–শার্ট।
কুর্তা
আমাদের দেশে এখন ডেনিমের কুর্তাও পাওয়া যাচ্ছে। এ ধরনের কুর্তা ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে বেশ ভালো। স্টাইলিশ লুকের জন্য লেগিংস বা প্যান্টের সঙ্গে অনায়াসে পরতে পারেন ডেনিমের কুর্তা। সঙ্গে যোগ করতে পারেন নিজের পছন্দের যেকোনো রং বা প্রিন্টের স্কার্ফ বা ওড়না।
অ্যাকসেসরিজ
শুধু পোশাক নয়, অ্যাকসেসরিজের দুনিয়ায় শক্ত জায়গা দখল করে আছে ডেনিম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ডেনিমের জুতা ও ব্যাগ। নানা ডিজাইনের এই অনুষঙ্গগুলো এখন সবারই খুব পছন্দের। ডেনিমের ব্যাগ আর জুতা দেখতে শুধু স্টাইলিশই নয়, টেকসইও বটে।
ক্ল্যাসিক ডেনিম সব জায়গায়, সব ঋতুতে, সব পরিবেশে, সব আয়োজনে দারুণভাবে মানিয়ে যায়। তাই কী পরবেন ভেবে ঠিক করতে না পারার মতো জটিল অবস্থায় চোখ বন্ধ করে বেছে নিন ডেনিম। কারণ, ফ্যাশনে ‘ডেনিম ইজ অলওয়েজ আ গুড আইডিয়া’।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment